সুনির্মল সেন,সিলেট থেকে : ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ যে কোন পণ্য দর কষা-কষি ছাড়া আজ দীর্ঘদিন যাবত ক্রয় করে আসছেন ক্রেতারা তার নাম ‘ফর্মেসীর ঔষুধ।’
ঔষুধের ক্ষেত্রে কেউই কোনো দর-দাম করেন না। গ্রাহক ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ফার্মেসীতে নিয়ে যায়, বিক্রেতা ঔষুধ দেয়, ক্রেতা কোনো বাক্যালাফ না করে মূল্য দিয়ে চলে আসে। কিন্তু এক্ষেত্রে কেউই ভাবতে পারেনা, দোকানদার এক টাকার ঔষুধ মূল্য রেখেছে পাঁচ টাকা। পরিস্থিতিটা ঔষুধের ক্ষেত্রে এমনই।
বর্তমানে ঔষুধের বাজারে চলছে সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করা সাম্রাজ্যবাদী নিয়মের আলোকে বেনিয়া ব্যবসা। এর মধ্যে জীবন রক্ষাকারী জরুরী ঔষুধের ক্ষেত্রে লুটপাটের পরিমান কল্পনাথিত । দেশী-বিদেশী প্রকার ভেদে ওইসব ঔষুধের মূল্য ৫শ’ থেকে সহস্রভাগ বেশী রাখা হচ্ছে।
নিত্য দিনের মাছ-তরকারীর বাজার দেখার লোক থাকলেও ঔষুধের বাজার তদারকিতে কেউ নেই। এ বিষয়টি সিলেবাসীর জন্য বিপদ বার্তা নিয়ে আসছে। পাশাপাশি দিনের পর দিন বেড়েই চলছে ডাক্তার সাহেবদের ফি। এর ফলে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। তবে অন্যান্য জেলার চেয়ে সিলেটে এর প্রকোপ বেশি ।
ছোট-খাটো সাধারণ কোনো অসুখ নিয়ে ডাক্তার এবং ফার্মেসীতে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। অথবা গেলেও ঔষুধের মূল্য জিজ্ঞেস করার পর তা ক্রয় করার সামর্থ অনেকেরই থাকে না। অনেক লোকের ধার-দেনা করার সামর্থ থাকলেও নিম্নবিত্তদের রোগ চেপে রাখতে হয়। দীর্ঘদিন রোগ শরীরে পূষে রাখা ছাড়া উপায় থাকে না তাদের। ঢাকা, সিলেটসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানের নিম্নবিত্ত মানুষের অভিজ্ঞতা প্রায় একই রকম।
এদিকে, প্রাপ্ত তথ্য মতে বাংলাদেশ ঔষুধ প্রশাসনের কাছে ১১৭টি অত্যাবশ্যকীয় ঔষুধের একটি তালিকা রয়েছে। মানুষের জীবন রক্ষাকারী ঔষুধ নিয়ে এভাবে চলতে থাকলে কিছু দিন পর মানুষ, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ ঔষুধ ক্রয় করতে না পেরে ধুঁকে ধুঁকে মারা যাবে।
এ ব্যাপারে জানতে সিলেটের সিভিল সার্জন হিমাংশু লাল রায়-র সাথে মুঠোয়ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বেশিরভাগ ঔষুধে দাম নির্ধারণ করা থাকা । তাছাড়া কোন ভূক্তভোগি এনিয়ে কোন অভিযোগও করেননি । তিনি আর বলেন, ঔষুধের দোকান (বাজার)মনিটরিং সাধারনত ড্রাগ এর পক্ষ থেকে করার কথা । আমাদের লোকসংখ্যা অনেক কম,বাজারে এখন ঔষুধ দোকানের অভাব নেই । তবে যে কোম্পানীগুলো ড্রাগ বিক্রয় করে তারাও চাঁয়না যে মূল্যে বেশি হারে রাখার । কারন এতে করে ওই কোম্পানীগুলোর সুনাম ক্ষুন্ন হবে । তারপরেও বিষয়টি খুঁজ নিয়ে দেখা হবে যাতে করে লোকজন হয়রানী না হয় ।