গোয়াইনঘাট (সিলেট) প্রতিনিধিঃ: সিলেটের গোয়াইনঘাটে ভারতীয় সীমান্ত রেখার মাত্র ৩কিলোমিটারের ভেতরে নির্মিত হচ্ছে ফিলিং ষ্টেশন। হাইকোর্টের আদেশ লংঘন করে এই ফিলিং ষ্টেশনের নির্মান কাজ অব্যাহত থাকলেও নিরব রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এতে করে প্রতিবেশী ভারতে জালানী তেল পাচারের সম্ভবনার পাশাপাশি এ প্রতিষ্টানকে ঘিওে বিশৃংখল পরিস্থিতি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী হাদারপার বাজার এলাকায় নির্মানাধীন জ্বালানী তেলের এ পাম্পের নাম ‘মেসার্স রহমান ফিলিং ষ্টেশন’।
সরজমিনে জানা গেছে, সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী হাদারপার বাজারে জ্বালানী তেল বিক্রির রয়েছে ১০টির বেশী খুচরা দোকান বা প্যাক পয়েন্ট। তা’ সত্বেও পার্শ্ববর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর রাজনগরের জনৈক মতিউর রহমান ওই বাজারে ‘মেসার্স রহমান ফিলিং ষ্টেশন’ নামে জ্বালানী তেলের একটি পাম্প নির্মান কাজ শুরু করেন। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী সহ এলাকাবাসী ওই স্থানে ফিলিং ষ্টেশন নির্মানের বিরোধীতা করে সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সার্ভেয়ার নিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন ও সার্ভে করাকালে ফিলিং ষ্টেশনটি সীমান্তের মাত্র ৩ কিলো মিটারের মধ্যে পড়ে এবং এই পাম্প থেকে সীমান্ত পথে প্রতিবেশী ভারতে তেল পাচারের আশংকা রয়েছে মর্মে জেলা প্রশাসক বরাবরে নেতিবাচক রিপোর্ট প্রদান। এতে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে এবছরের ৭ফেব্র“য়ারি ৭৪(৩) স্মারকে ফিলিং ষ্টেশন নির্মান বন্ধে উপজেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু এর মাত্র ৩ মাসের ব্যবধানে পূর্বের ৩কিলোমিটারকে ৮কিলোমিটার বানিয়ে ফিলিং ষ্টেশন করার অনুমতি দিয়ে দেয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন এলাকার ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা। তারা জেলা প্রশাসনের এ যোগাযোগী অনুমতি বাতিল দাবি করে হাইকোর্টে ৭৭৭৪/২০১৭ নং রিট পিটিশন দাখিল করেন। বিচারপতি মো.যুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবির সমন্বয়ে হাইকোর্টের ভিশিন বেঞ্চে এবছরের ৪ জুন রিট-এর শুনানী হয়। শুনানী শেষে হাইকোর্ট ৬ মাসের জন্য ‘মেসার্স রহমান ফিলিং ষ্টেশন’ নির্মান কাজ স্থগিত ঘোষনা করেন। হাইকোর্টেও আদেশ যথাসময়ে সিলেটের জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সহ সর্বমহলে পৌছে দেয়া হয় এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে হাইকোর্টের এ আদেশ কার্যকর করার জন্য গত ২৮জুন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশও দেয়া হয়। কিন্তু ফিলিং ষ্টেশন নির্মান বন্ধের কোন উদ্যোগ নেননি উপজেলা প্রশাসন ।
ফলে হাইকোর্টের আদেশ লংঘন করে মতিউর রহমান সীমান্ত এলাকায় তার ফিলিং ষ্টেশন নির্মান কাজ অব্যাহত রেখেছেন। এতে করে এলাকার জনমনে ক্ষোভ আরো চরম আকার ধারণ করেছে এবং যেকোন সময় ক্ষোভের বিস্ফোরন ঘটে অনাকাংখিত ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
এব্যাপারে মেসার্স রহমান ফিলিং ষ্টেশন’র মালিক মতিউর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি হাদারপার বাজারে তার মালিকানায় ফিলিং ষ্টেশন নির্মানের কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান,স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে তিনি পাম্পের নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং সরঞ্জামাদিও নিয়ে এসেছেন। হাইকোর্টের কোন নির্দশনা বা নোটিশ এখনো তার কাছে পৌছায়নি। পৌছালে যথাযথ আইনী মোকাবেলা করবেন বলে জানান তিনি।