সিলেট অফিস : বছর ঘুরে আবার এসেছে হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর ওরস। ৬৯৮তম এই ওরস শুরু হচ্ছে শনিবার (১২ আগস্ট)। তবে এর আগে আজ বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) থেকেই দলে দলে মাজারে আসতে শুরু করবেন ভক্তরা। শনিবার সকাল থেকে শুরু হয়ে রবিবার ভোরে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই ওরস।
সিলেটের বাৎসরিক এই মহাআয়োজনকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে জোরদার করা হয়েছে মাজারের নিরাপত্তা। শুক্রবার থেকেই মাজারে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রস্তুত সিলেট মহানগর পুলিশ ও র্যাব-৯।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওরসকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লাখো ভক্তরা বৃহস্পতিবার থেকেই সিলেটে আসতে শুরু করবেন। পুলিশের নজরদারি ও কার্যক্রমও শুরু হবে এদিন থেকেই। আর শুক্রবার থেকে পুলিশ ও র্যাব মাজারকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পুরোদমে। এর জন্য আরআরএফ ও এপিবিএনের সাড়ে শতাধিক পুলিশ সদস্যও নিয়োজিত থাকবেন। এদিকে, ওরস উপলক্ষে নগরীতে যেন যানজট তৈরি না হয়, তা নিশ্চিত করতেও ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে।
মাজার এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুরো মাজার এলাকায় এরই মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে ২০টি সিসি ক্যামেরা। ওরস শুরু হওয়ার আগে আরও ৩০ থেকে ৪০টি ক্যামেরা বসানো হবে। মাজারকেন্দ্রিক হোটেলগুলোর মনিটরিং করবেন সাদা পোশাকের পুলিশ। এছাড়া, সিলেট নগরীর প্রবেশমুখ দক্ষিণ সুরমা থেকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে বসানো হবে পুলিশের চেকপোস্ট।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে, সেদিকে লক্ষ রেখে সিলেট মহানগর পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। মাঠ পর্যায়ের পুলিশের পাশাপাশি মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও তৎপর থাকবেন। এমনকি মাজারকেন্দ্রিক পুলিশি তৎপরতা নজরদারি করবেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। দায়িত্ব পালনে কেউ গাফিলতি করলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ ওরসে আগতদের নিরাপত্তার জন্য ৫০টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে বলে জানান তিনি।
মাজার কর্তৃপক্ষ জানায়, রেওয়াজ অনুযায়ী ওরসের দিন সকাল ৯টা থেকে শুরু হবে মাজারে গিলাফ চড়ানো। চলবে বিকাল পর্যন্ত। পরদিন আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ওরসের আনুষ্ঠানিকতা।
উল্লেখ্য, ইসলাম প্রচারের জন্য হযরত শাহজালাল (রহ.) ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে ৩৬০ সফরসঙ্গী নিয়ে সিলেট আসেন। ১৩৪৬ খ্রিস্টাব্দের ১৯ জিলকদ তিনি ইন্তেকাল করেন। সিলেটে তিনি যে টিলায় বসবাস করতেন, সেখানেই তাকে দাফন করা হয়। তার কবরকে ঘিরেই পরে গড়ে উঠেছে মাজার।