জিন-ভূত তাড়ানোর নামে শতাধিক নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন এবং তা ভিডিও ধারণ করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়ার কথা অকপটে স্বীকার করেছেন ভণ্ডপীর আহসান হাবিব পিয়ার। শুধু তা-ই নয়, ইসলাম ধর্ম প্রচারের নামে তিনি দেশ-বিদেশ থেকে সংগ্রহ করা মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। শনিবার দু’দিনের রিমান্ড শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিকে আদালতে হাজির করে জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন। ঢাকা মহানগর হাকিম একেএম মাঈন উদ্দিন সিদ্দিকী আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। রেকর্ড শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ভণ্ডপীর আহসান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। নারীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি আদালতে স্বীকার করেছে।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভণ্ডপীর শুধু মেয়েদের সঙ্গে প্রতারণা করেনি। রোহিঙ্গাদের সাহায্যের কথা বলে দেশ-বিদেশ থেকে সাহায্য সংগ্রহ করে সেসব অর্থ আত্মসাৎ করেছে। ‘এএইচপি’ টেলিভিশনের সাংবাদিক পরিচয়ে নানা ব্যক্তির সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ভুক্তভোগী একাধিক নারী গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, তাদের সঙ্গে প্রতারণা করে ভণ্ডপীর ভিডিও ধারণা করেছে। সেগুলো উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। সেসব ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে যে কোন মুহূর্তে চলে আসতে পারে- এমন আতঙ্কে রয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এদিকে ভণ্ডপীর আহসান হাবিব পিয়ারকে গ্রেফতারের পর তার নানা অপকর্ম ও প্রতারণার ভয়াবহ চিত্র সামনে চলে এসেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভণ্ডপীরকে নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই এ ভণ্ডপীরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন। আবার তরুণীসহ অনেকেই এ ভণ্ডপীরের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এর আগে বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার জিন-ভূত তাড়ানোর নাম করে পর্নো ভিডিও ধারণকারী ও ভণ্ডপীর আহসান হাবিব পিয়ারকে গ্রেফতার করে কাউন্টার টেরোরিজমের সাইবার ক্রাইম ইউনিট। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঠালে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। সূত্র: যুগান্তর