মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার পূর্র্ব শ্রীমঙ্গল (লালবাগ) গ্রামের মনাইউল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী পুকুর পাড়ে মৃত নূর মিয়ার ছেলে মোতাহির তার নিজের বসত ভিটায় নূরে দরবারিয়া নামে ৭টি কবরস্থান বানিয়ে ৭ পীরের মাজার নাম ধারণ করে একটি মিথ্যা ও ভূয়া মাজার গড়ে তুলা হয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ উঠেছিলঅনেকদিন থেকেই।
উল্লেখ্য এই বছরের গত ২২ ফেব্রুয়ারী পুর্ব শ্রীমঙ্গল (লালবাগ) এলাকাবাসী কর্তৃক ভূয়া মাজার ও ভন্ড পীরের নানান কু-কর্মের বিরুদ্ধে এবং ভূয়া মাজার উচ্ছেদের জন্য মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার,শ্রীমঙ্গলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা,উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, কমান্ডিং অফিসার শ্রীমঙ্গল র্যাব ৯, শ্রীমঙ্গল থানা অফিসার ইনর্চাজ ও ৩নং ইউপি চেয়ারম্যান বরাবরে পৃথক পৃথক ভাবে ৭ পৃষ্ঠায় গনস্বাক্ষর সম্বলিত অভিযোগ পত্র দাখিল করা হয়েছিল।
অভিযোগে জানা যায় যে শ্রীমঙ্গল উপজেলার ৩ নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের পূর্ব শ্রীমঙ্গল (লালবাগ) গ্রামের মৃত নূর মিয়ার ছেলে মোতাহির ৪/৫ বছর আগ থেকে তার বসত ভিটায় কপ্লিত ৭টি কবরস্থান বানিয়ে ৭ পীরের মাজার নাম দিয়ে একটি মিথ্যা ও ভূয়া মাজার রাতের আধাঁরে তৈরী করে । লোকমুখে প্রচার চালিয়ে মানুষের মধ্যে এই ভূয়া মাজারের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি করে উক্ত মাজারের কবর গুলো পীরের বংশধর ও নিজেকে জ্বীনের বাদশা হিসেবে জাহির করছে। পূর্ব শ্রীমঙ্গল এলাকার মৃত নূর মিয়ার তৃতীয় ছেলে মোতাহির মিয়া পূর্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি ভূয়া মাজার তৈরী করে লোকমুখে প্রচার করে প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
এলাকাবাসির অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়। ভন্ড মোতাহিরের পূর্ব পরিকল্পীত প্ল্যান অনুযায়ী মাজার নামধারী ভূয়া মাজারকে ৭ পীরের মাজার হিসেবে আখ্যায়িত করে ইসলাম ধর্মের সঙ্গে প্রতারণা করছে।
এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বি মকবুল মিয়া জানান, ৪/৫ বছর আগে ভন্ড পীর নামক মোতাহিরের একটি টং দোকান ছিল আর এই টং দোকানে বসেই সে আমাদের এলাকার অনেকের সাথে বেশি কামাইয়ের পরামর্শ করত। বলতো তার কু-বুদ্ধির কথা। বিদেশে গিয়েও কিছু না করার ব্যর্থতার কথা। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পায়তারায় বারবার চাপ প্রয়োগ করেন অন্য ভাইদের উপর ,বলেন তড়িৎ গতিতে পিতৃ সম্পদ ভাগ বাটোয়ারা করার জন্য। তার চাপের কারনে বিগত ৪/৫ বছর আগে তাদের পিতৃ সম্পদ ভাইদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করা হয়। আর তখন থেকেই জি¦নের বাদশা ভন্ডপীর মোতাহিরের নানান রূপ প্রকাশ পেতে থাকে।
এসময় শ্রীমঙ্গলে কল্পিত ৭ পীরের ভূয়া মাজার নিয়ে এলাকাবাসির মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। এলাকাবাসির পক্ষ থেকে মানববন্ধন সহ নানান কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল। তখন এ ঘটনার খবর পেয়ে সংবাদ সংগ্রহের জন্য কল্পিত ভূয়া মাজারের তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করতে গেলে আমার সিলেট টোয়েন্টিফোর ডট কম এর সম্পাদক মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান আশরাফী, জাতীয় দৈনিক আমার বার্তা শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি মো: জহিরুল ইসলাম, আমার সিলেট টোয়েন্টিফোর ডট কম’র নিজস্ব প্রতিবেদক কাজল শীল প্রমুখ সাংবাদিকগন মাজারের সাথে সংশ্লিষ্টদের দ্বারা অবরুদ্ধ ও প্রহৃত হন। স্থানীয় সচেতন জনগন এবং প্রশাসন খবর পেয়ে অবরুদ্ধ সাংবাদিকদের আটককৃত ক্যামেরাসহ উদ্ধার করেন। উদ্ধার হওয়ার পর সাংবাদিকরা ঘটনার বিবরণ দিয়ে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি অভিযোগ দেন । অভিযোগ দেওয়া হলে এবং অভিযোগটি পুলিশ আমলে নিলেও তখনকার দায়িত্বরত তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগের বিষয়ে কোন প্রকার আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। বরং উল্টো মাজারের পক্ষে নানান ভূমিকা নিয়েছিল প্রশাসন। এ সময় ভন্ড মোতাহির তার সঙ্গবদ্ধ অসাধু চক্র নিয়ে মাজারের পক্ষে সাফাইনামা তৈরী করে একটি মিথ্যা, ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে।
এদিকে ঘটনার দীর্ঘ পাঁচমাস অতিবাহিত হওয়ার পর গত ৫ আগষ্ট শনিবার বিকেলে শ্রীমঙ্গল থানার এস আই ফজলে রাব্বি,এ এস আই নূরে আলম সহ তিন সদস্যের একটি দল কল্পিত ৭ পীরের মাজার পরিদর্শন করেন। ভুয়া মাজার পরিদর্শনকালে পুলিশের সদস্যগন ভন্ড মোতাহিরের সাথে মাজার বন্ধের বিষয়ে কথা বলেন, এসময় ভন্ড মোতাহির পুলিশকে হাতের আঙ্গুল আকাশের দিকে তাক করিয়ে বলেন , সব তিনি জানেন । পরিশর্দন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় অতীতে পূর্ব শ্রীমঙ্গলে কোন ৭ পীরের মাজার ছিল না এটি একটি কল্পিত ও ভূয়া মাজার। এই মাজারের কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ রয়েছে। তাই পুলিশ হেডকোর্য়াটারের নির্দেশে মাজার বন্ধের বিষয়টি মোতাহির সহ তার অনুসারীদের জানাতে এসেছি।
এলাকাবাসির জোর দাবী এই ভন্ড মোতাহির ও তার কল্পিত এবং ভূয়া ৭ পীরের মাজারের সাথে যারা জড়িত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে এবং অবিলম্বে এই ভূয়া ৭পীরের মাজারটি উচ্ছেদ করতে হবে।